আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট):
মোংলায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে।
রোববার (২৩ জুন) সকাল ১০টায় উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের আয়োজনে তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর্যাল ও প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ।
পরে পৌর আ’লীগ কার্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য একটি র্যালী বের হয়ে পৌর শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌর আ’লীগ কার্যালয় এসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস’স সভাপতিত্বে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ এক ও অভিন্ন এবং বাঙালি জাতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানে বাঙালি জাতির সংগ্রাম ও গৌরবের ইতিহাস। এ রাজনৈতিক দলটি দেশের সুদীর্ঘ রাজনীতি এবং বাঙালি জাতির আন্দোলন–সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দলটির নেতৃত্বেই এদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন–সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাসহ বাঙালি জাতির যা কিছু শ্রেষ্ঠ অর্জন, তার মূলে রয়েছে জনগণের এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব। আওয়ামী লীগের শুভ জন্মদিন ঐতিহাসিক ২৩ জুন অঙ্কুরিত হয়েছিল ‘স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নসূত্র’।
আওয়ামী লীগের লক্ষ্য– দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ এবং বাঙালি জাতিকে বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। ৭৫ বছরে দেশ আজ উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং সাফল্যের জয়গানে মুখরিত। অপ্রতিরোধ্য আওয়ামী লীগ কেবল অতীত বর্তমান নয়, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের নির্মাতা।
এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন, পৌর মেয়র ও পৌর আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইস্রাফিল হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, আ’লীগ নেতা আলহাজ্ব শেখ আব্দুস সালাম, চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা মো: তারিকুল ইসলাম, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো: মিজানুর রহমানসহ আ’লীগ ও তার সহসযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষো কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেন আ’লীগ নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে আটক ছিলেন। তাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ করা হলেও পরবর্তী সময়ে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম ‘আওয়ামী লীগ’ করা হয়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। আর ‘পূর্ব পাকিস্তান’ শব্দ দুইটি বাদ পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে। বাংলাদেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে প্রবাসী সরকারের সব কাগজপত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নাম ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৭০ সাল থেকে এই দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা।
১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ৬ বছরের নির্বাসন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নব উদ্যোমে সংগঠিত হয়। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালি জাতির হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের এক নবতর সংগ্রামের পথে যাত্রা শুরু করে আওয়ামী লীগ।
Leave a Reply