মো: রনি হোসেন
যশোরের যশ খেজুরের রস, এই প্রবাদটি চিরায়ত বাংলার প্রতিটি মানুষের মুখে-মুখে ধ্বনিত হয় শীতের আগমনে। কুঁয়াশার চাঁদরে মোড়ানো সকালের সোনালী সূর্যের মৃদু হাসি বাংলার মানুষকে বুঝিয়ে দেয় শীতের বার্তা।
শীতের আগমনের সাথে সাথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে যশোরের কেশবপুর উপজেলার গাছিরা। উপজেলার পাঁজিয়া, বেলকাটি, গড়ভাংগা, কলাগাছি, গৌরিঘােনা, মাগুরখালি, মঙ্গলকোট, বড়েঙ্গা, পাথরা, সাগড়দাঁড়ি, হাসানপুর, কাস্তা, ভাল্লকঘর, মূলগ্রাম, ভান্ডারখােলা, দেউলি, বাগদাহ, সাবদিয়া, মজিদপুর, মধ্যকুল, ব্ৰহ্মকাটি, রামচন্দ্রপুর, ব্যাসডাঙ্গাসহ অনেক গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে গাছিরা খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য প্রয়ােজনীয় উপকরণ যেমন ঠিলে-খুংগি-দড়া- গাছি দাঁ বালিধাসহ ইত্যাদি নিয়ে গাছ কাঁটার কাজে ব্যস্ত রয়েছে।
কেশবপুর, মণিরামপুর থেকে তাজা খেজুরের রসের তৈরি গুড় বাংলাদেশের প্রত্যেক অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। পাশা-পাশি আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারত, মিয়ানমারসহ পৃথিবীর কয়েকটি দেশে কেশবপুরের খেজুরের গুড়ের ব্যাপক কদর রয়েছে। যশোর তথা কেশবপুরকে সারা পৃথিবীতে পরিচিত করেছে যে কয়টি বিষয় তার মধ্যে যশোরের কেশবপুরের খেজুরের রস ও গুড় অন্যতম।
বেলকাটি গ্রামের গাছি কুদ্দুস জানান, জিরেন রস দিয়ে দানাগুড় অথবা (ছিন্নি পাটালী) তৈরী হয়। ঘোলা রস দিয়ে তৈরী হয় ঝুলা গুড়। নইলনের রসের পাটালী খেতে খুব সুস্বাদু হয় বলে বাজারে এর কদর অনেক বেশি। কেশবপুরের খেজুরের রসের খ্যাতি বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
পাঁজিয়া এলাকার গাছি আকবর আলি জানান, খেজুর গাছ এখন বিলুপ্ত হতে চলেছে। আগের মতো এখন আর এলাকায় খেজুর গাছ নেই। যা আছে তাই নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।
অপরদিকে ইট ভাটা ও টালী কারখানায় জ্বালানি হিসাবে অবাধে খেজুর গাছ ব্যবহার করার ফলে এ উপজেলায় খেজুর গাছের সংকট সৃষ্টি হয়েছে এমন অভিযোগ গাছিদের।
Leave a Reply